লাতিন আমেরিকায় আমার সবচে পছন্দের লেখক হুয়ান রুলফো। সেটা এজন্য না যে, তিনি ম্যাজিক রিয়ালিজমের প্রবর্তকদের একজন। সেক্ষেত্রে হোসে মার্তি কিংবা কার্পেন্তিয়েরকেও একই স্বীকৃতি দিতে হবে। আস্তুরিয়াস কিংবা কর্তাজার পড়েছি, চোখ-ধাঁধানো ’ম্যাজিক’ তাদের ফিকশনে! অনুবাদে পাওয়া একেবারেই অসম্ভব তাই আরগুইরাস পড়াই হল না এ জীবনে। বোর্হেস অনেক বেশি প্রলিফিক এবং প্রহেলিকাময়। ইয়োসা বা ফুয়েন্তেস-এ ম্যাজিক তেমন নাই, কিন্তু অনেক বেশি ভার্সেটাইল তারা। কিন্তু গোটা লাতিন আমেরিকা নামক ভূখণ্ডটাকে কলম বানিয়ে লিখেছেন একজনই: গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস।

লাতিন আমেরিকা থেকে বহু দূরে, এই গোলার্ধে, আমরা বেড়ে উঠছিলাম মূলত ইংরেজি-ফরাসি নন্দনতত্ত্বে-র তত্ত্বাবধানে।‘লাতিন আমেরিকা’ নামক এই উদ্ভাসের কথা প্রথম শুনি কবি মোহাম্মদ রফিকের মুখে। আশির দশকের শেষ দিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নামক এক জাদুবাস্তব উপত্যকায়। তিনি তার পাঠের আকাশ থেকে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি ঝরাতেন, সতের-আঠার বছর বয়সে চাতক পাখির মত তাইই হা করে গিলতাম। তখন পর্যন্ত ইংরেজিতে আস্ত একখানা উপন্যাস পড়ে ফেলবার সামর্থ কুলিয়ে উঠতে পারি নি। মার্কেসের ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড–এর বাংলা অনুবাদ আরো কিছুকাল পরের ঘটনা। ফলে, দু’চারটা গল্প বাংলায় ও ইংরেজিতে পড়ে এবং মোহাম্মদ রফিকের মুগ্ধ ন্যারেশন থেকে আন্দাজ করতাম এই জলে-ভাসা শৈলচূড়ার নিচে কী বিশাল সিন্ধুপর্বত অপেক্ষা করছে!

comments (1)
আপনার লেখাগুলো বরাবরই ভালো লাগে। আমি নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করি।