গল্পের বই পড়তে কেনা পছন্দ করে! কিন্তু সব বইয়ের গল্প কই মনমত হয়? না অবশ্যই না। গল্পের সব বই অবশ্যই ভাল হয় না। আর তাই তো ১০ টি সেরা গল্পের বইয়ের নাম দেওয়া হয়েছে এই বইয়ে। এবং মজার ব্যাপার হলো সেরা ১০ টি বইয়ের মধ্যে ৫ টি হল হুমায়ূন আহমেদ এর। আপনার সংগ্রহে আছে কি এই ১০ টি বই? যদি না থাকে তবে এখনি সংগ্রহ করুন…।

১০। বনের রাজা
হুমায়ূন আহমেদ
ছোটদের জন্য হুমায়ুন আহমেদ এর আরেকটি লেখা ‘বনের রাজা’। ছোটদের জন্য লেখা সুন্দর বই গুলোর মধ্য একটি এই বইটির। বইটির গল্প শুরু হয় এক জঙ্গলে বসবাস করতো অনেক পশুপাখিদের নিয়ে। পশু পাখিদের মধ্যে কোন রাজা না থাকায় তারা সিদ্ধান্ত নেয় রাজা নির্বাচন করার। দুষ্টু শিয়াল ভুলিয়ে ভালিয়ে বনের রাজা হয়ে যায়। শিয়াল কি শেষ পর্যন্ত রাজা থাকতে পারবে? নাকি শিয়ালের দুষ্টু বুদ্ধির জন্য সাজা পাবে? এই নিয়েই লেখা বইটি। আপনার বাচ্চাকে যদি ভালো গল্পের বই উপহার দিতে চান তাহলে এই বইটি উপহার দিতে পারেন। হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর অসাধারণ লেখনী বইটি অসাধারণ করে তুলেছে। মাঝে মধ্যে এতো সুন্দর বই পড়লে আফসোস হয় বড় হওয়ার। সব মিলিয়ে বইটি খুবই ভাল। বইটি পড়ে বাচ্চারা মজাই পাবে। মাত্র ৯০ টাকার বইটি আপনার শিশুকে উপহার দিন। তাকে হারিয়ে যেতে দিন গল্প পড়ার আনন্দে।

৯। চীনের রূপকথা
আমীরুল ইসলাম
চীনা রূপকথার গল্প পৃথিবী বিখ্যাত। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় চীনের বহু বাছাই গল্প অনূদিত হয়েছে। বাংলা ভাষাতেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। বাংলা শিশুসাহিত্যের ঊষালগ্নেই অনূদিত হয়েছে চীনের রুপকথা। অতি সম্প্রতিও চীনের গল্পের অনুবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগ থেকে প্রকাশিত রূপকথার সিরিজের আওতায় প্রকাশিত হল চীনের রুপকথা। চীনের রূপকথার বিপুল সম্ভার থেকে এত ক্ষুদ্র ও কৃশকায় গ্রন্থে রুপকথা সংকলনের সীমাবদ্ধতা থাকবেই। তবে আমরা চেষ্টা করেছি, চীনের প্রতিনিধিত্বকারী গল্পগুলো যেন এই সংকলনে স্থান পায়। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বই থেকে গল্পগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। পড়ে মূল আবহ অক্ষুন্ন রেখে গল্পগুলো পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ – এমনটি বলা যাবে না। বরং গল্পগুলো মৌলিকভাবেই পূর্ণলিখিত হয়েছে।
চীনের রূপকথার গল্পগুলো অরূপলোকে বিহার করলেও এর মূল প্রোথিত রয়েছে বাস্তব জীবনের হাজার উপাদানের ভিতরে। দীর্ঘ গৌরবময় ইতিহাসের পটভূমিতে প্রাণশক্তিকে উজ্জীবিত করে সৃষ্টি হয়েছে রূপকথার আশ্চর্য এইসব সুন্দর গল্পগুলো। হৃদয়ের সমস্ত সুধা মথিত করে জন্ম নেয় রূপকথা। রূপকথা আমাদের মানস মুক্তির প্রতীক। রূপকথা প্রেমী পাঠকদের বইটি ভালো লাগলে আমরা আনন্দিত হব।

৮। নীল হাতি
হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ শুধু বড়দের জন্যেই বই লিখে যান নি। ছোটদের জন্যও আছে তার কিছু মজার গল্প সংকলন। ছোট ছোট গল্প আর মজার সেসব গল্পের বইগুলোর মাঝে একটি হলো “নীল হাতি”। “নীল হাতি” এই বইতে আছে মোট তিনটি গল্প। ★ নীল হাতি ★ একটি মামদো ভূতের গল্প ★ আকাশপরী এই তিন গল্পের প্রধান চরিত্র নীলু নামের ছোট্ট একটি মেয়ে। প্রথম গল্প: নীলু নামের এই ছোট্ট মেয়েটিকে তার মামা আমেরিকা থেকে একটি নীল হাতি পাঠিয়েছে। সেই মামাকে নীলু কখনও দেখে নি। শুধু জানে তার এক মামা আছেন আমেরিকাতে। সেই মামা যখন নীল হাতি উপহার পাঠালেন নীলুর খুশি দেখে কে..! সারাক্ষণ নীল হাতির সাথে সময় কাটে নীলুর। সুন্দর সময় কাটতে কাটতেই ঘটে গেলো এক অঘটন। অঘটনটা এই নীল হাতিকে নিয়েই। সেই গল্পই আছে “নীল হাতি”তে। দ্বিতীয় গল্প: প্রতিবার নীলুর জন্মদিনে বাবা-মা উপহার দেয় নীলুকে। রাতে ছাদে বসে জমিয়ে আড্ডা দেয়া হয়, চা খাওয়া হয় সবাই মিলে। কিন্তু এবার তা হলো না। মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। মাকে নিয়ে সবাই ব্যস্ত। এরই মাঝে ঘটলো এক মজার কাহিনী। নীলুর দেখা হলো মামদো ভূতের সাথে। তারপর..? বাকি গল্প না হয় বই থেকেই জেনে নিন। তৃতীয় গল্প: পরী বলে কি কিছু আছে? বাবা বলে নেই, মাও বলে ওসব ফাকিঁবাজি। কিন্তু বাবার বন্ধু আজিজ চাচ্চু বলে আকাশপরী বলে আছে। পূর্ণিমার দিন তারা নাকি পৃথিবীতে আসে। যখন তারা পৃথিবীতে আসে তখন আশেপাশে অনেক ফুল ফুটে। সেই আজিজ চাচ্চুর কাছেই নীলু শুনলো সেই আকাশপরীদের নিয়ে দারুণ একটি গল্প….!

৭। ফুলিদের বাঘ
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
অনেকদিন আগে আমেরিকার অরিগন স্টেটে একটা সাফারী পার্কে আমরা খুব হাসিখুশী একটা বাঘ দেখেছিলাম। যে কেউ তাকে কোলে নিয়ে ছবি তুলতে পারতো- আমরাও তুলেছিলাম। এই বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় সেই ছবিগুলো দিয়ে দিয়েছি! সেই বাঘটি দেখে আমার মনে হয়েছিল হাসিখুশী একটা বাঘ নিয়ে গল্প লিখলে কেমন হয়? সেজন্যে লেখা হলো, ফুলিদের বাঘ।
-মুহম্মদ জাফর ইকবাল
৬। বাঙ্গালীর হাসির গল্প -১
জসীম উদদীন
জসীমউদ্দীনের সাথে পরিচয় পাঠ্যবইয়ের কবিতা দিয়ে। পল্লীকবি হিসেবে তিনি সুপরিচিত। তার অসাধারণ কবিতাগুলো আজও পাঠককে উদ্বেলিত করে। তবে তার রচিত গল্প উপন্যাসের খোঁজ রাখে খুব কম মানুষই। হয়ত সংখ্যার তুলনায় নগণ্য। তবে এই গুটিকতক কাজ দিয়েই তিনি নিজের জাত চিনিয়ে গেছেন। তার রচিত বাঙালীর হাসির গল্পের দুটি খন্ডে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের অনেকগুলো গল্প পাওয়া যাবে। তবে গল্পগুলোর এক জায়গায় মিল। প্রতিটি গল্পই হাস্যরসাত্মক, কূটবুদ্ধি, বোকামী, সরলতা, অজ্ঞতা, দুষ্টুমি, গোঁড়ামি সবকিছুর মিশেলে বাঙালীর জীবন-যাপন আর তাদের কান্ডকারখানা নিয়ে গল্পগুলো রচিত। মাছ, আয়না, তেলের শিশি, বেলপাতা, পুতা, নরুন এসব সামান্য আটপৌরে জিনিস নিয়ে তিনি এমন সব গল্প ফেঁদেছেন না পড়লে বিশ্বাস হবে না। এত অসাধারণ, চমৎকার হাসির গল্পগুলো আমাদের নিজস্ব সম্পদ ভাবলেই মন ভরে ওঠে। আজ আমরা যতই শহর কেন্দ্রিক হই না কেন এসব গল্প আমাদের শেকড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই ফসলের মাঠ, চাঁদের মায়াবী আলো, গল্পের আসর আর এসব ঘিরে থাকা অতি সাধারণ মানুষগুলো। যেন ভুল করে ফেলে আসা এক চেনা রূপকথার রাজ্য।
বাঙ্গালীর জীবনযাপন খুব সাদামাটা। ক্ষুদ্র এই ব-দ্বীপটি কোনকালেই কোন শাসকের কাছে তেমন গুরুত্ব পায় নি। তাই তেমন কোন উন্নতিও হয় নি স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোন বালাই ছিল না। হয়ত কালেভদ্রে দু’এক জন বড় কোন পরীক্ষায় পাশ করে নাম করে ফেলত। অক্ষরজ্ঞান কোনরকমে অর্জন করতে পারলেই দশজনে সমীহ করত। তবে আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে দীর্ঘকাল বঞ্চিত থাকলেও বুদ্ধিমত্তা বা হাস্যরসে পিছিয়ে ছিল না। লোকে মুখে মুখে গান বাঁধত। বানিয়ে গল্প বলে মজলিশ জমিয়ে রাখত। কখনও কখনও সত্যের সাথে রং চড়িয়ে রসিয়ে রসিয়ে বর্ণনা করত। আর সেখান থেকে লোকমুখে ঘুরে ঘুরে একসময় মূল গল্পের সাথে যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যেত। তবে সেটা নিয়ে কারো তেমন কোন অভিযোগ থাকত না। গল্প তো পাওয়া গেছে! গল্প রচনা বা সংরক্ষণে বাঙালী সাহিত্যিকদের ভূমিকা কোনভাবেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। কেউ লোককাহিনীগুলো জড় করে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করেছেন আবার কেউ গল্প রচনা করে বাঙলা সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন। খোঁজ নিলে দেখা যাবে অন্য কোন জাতির চেয়ে আমরা পিছিয়ে নেই। বরং চর্চার অভাবে দৃষ্টির আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে। অন্তত নিজের শেকড়টাকে অনুভব করতে চাইলেও আমাদের এগুলো হারিয়ে যেতে দেয়া উচিত না। বইটা আমার খুব পছন্দের। সব সময়ই পছন্দের তালিকায় থাকবে। মন খারাপের ঔষধ বলা যায়। একেবারে ডুবে যাই। আর এতবার পড়েও কখনও পুরোনো হয় না। সব বয়সের পাঠকই পড়ে আনন্দ পাবেন। অন্তত বেরসিকের মত কেউ ভালো লাগে নি বলতে পারবেন না।

৫। হলুদ পরী
হুমায়ূন আহমেদ
জন্মদিনের শুরুটা হল খুব সুন্দর। ভোরবেলা থেকে সবাই টেলিফোন করছে-হ্যাপি বার্থডে সুমি। শুভ জন্মদিন সুমি। জন্মদিনের শুভেচ্ছা নাও সুমি।
একেক বার টেলিফোন আসে আর কী যে ভালো লাগে সুমির! বিকেল থেকেই খালা এবং ফুপুরা আসতে শুরু করলেন। বাড়ি ভর্তি হয়ে গেল মানুষে। কেক কাটা হলো। জন্মদিনের গান গাওয়া হলো। তারপর শুরু হলো জন্মদিনের উপহারের প্যাকেট খোলার পালা।
সুমির বাবা সুন্দর কাগজে মোড়া একটা প্যাকেট দিয়ে বললেন, ‘তোমার হলুদ পরী বাজারে কোথাও খুঁজে পাইনি, তার বদলে নিয়ে এসেছি রিমোট কনট্রোল মোটর কার’।
সুমি বলল, ‘আমি তো সত্যিকারের পরী চেয়েছি।’
‘সত্যিকারের পরী মানে?’
‘যে পরী আকাশে উড়তে পারে। কথা বলতে পারে। গান গাইতে পারে। নাচতে পারে।’

৪। চার বন্ধু
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
সাদিব, নন্দিনী, অন্তি আর মাইকেল চারজন খুব ভালো বন্ধু। তারা একসাথে থাকে, একসাথে খেলে, একসাথে দুষ্টুমি করে। মাঝে মাঝে তারা ঝগড়াও করে ফেলে, তখন একজন আরেক জনের সাথে আড়ি দিয়ে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু কথা না বলে তারা বেশিক্ষণ থাকতে পারে না তাই একটু পরে আবার তাদের মাঝে ভাব হয়ে যায়।
একদিন বিকালবেলা নন্দিনী, অন্তি আর মাইকেল সাদিবদের বাসায় গেল। গিয়ে দেখে সাদিব জুতো পরে তাঁর বিছানার উপর হাঁটছে। নন্দিনী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “সাদিব তুমি জুতো পরে বিছানার হাঁটছ কেন?”
সাদিব বলল,” এগুলো নতুন জুতো। এই জুতো পরে মাটিতে হাঁটলে জুতো ময়লা হয়ে যাবে তাই আমি বিছানার উপর হাঁটছি ।”
মাইকেল বলল, “কিন্তু জুতো পরে মাটির উপরেই তো হাঁটতে হয়। সেজন্যই তো সবাই জুতো পরে।”
সাদিব বলল,” আমি সেটা জানি। আমি কালকে এই জুতো পরে বাইরে বের হব। শুধু নতুন জুতো না আমি তার সাথে নূতন সার্ট আর নূতন প্যান্টও পরব। কালকে সবকিছু নূতন পড়তে হবে ।”
অন্তি জিজ্ঞেস করল, “কালকে কেন সবকিছু নতুন পরতে হবে ?” …

৩। ছোটদের সেরা গল্প
হুমায়ূন আহমেদ
শিশু-কিশোরদের জন্য হুমায়ূন আহমেদ দু’হাতে না লিখলেও প্রচুর লিখেছেন। মজার মজার সব লেখা। রহস্য, এডভেঞ্চার, ভৌতিক গল্প, সায়েন্স ফিকশান কোন কিছুই বাদ দেন নি। তাঁর সেই সব লেখা থেকে বাছাই করা কিছু গল্প আমরা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। হুমায়ূন আহমেদ আমাদের প্রস্তাবে রাজি হলেন। যখন তাঁদের বললাম গল্প বাছাই করে দিতে, তখন তিনি বললেন- আমি কি করে বলব কোনটা সেরা গল্প, কোনটা নয়? আপনি বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করুন। ওদের মতামত দিয়ে সেরা গল্প বাছাই করুন। এই সংকলনে তাই করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষুদে পাঠক যে সব গল্পকে সেরা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেই সবই রাখা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষুদে পাঠক যে সব গল্পকে সেরা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেই সবই রাখা হয়েছে। গল্পের তালিকা লেখককে দেখানো হলে তিনি ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন- আমার কিছু ভাল গল্প বাচ্চারা বাদ দিয়েছে, এর কারণ কি? আমি বললাম, আপনার পছন্দের গল্প কি ঢুকিয়ে দেব? তিনি বললেন, অবশ্যই না। শিশুদের মতে কোনটি সেরা তা আমরা ঠিক করে ওদের উপর চাপিয়ে দেব না। ওরাই ওদেরটা ঠিক করবে। তাই করা উচিত। আমরা এই সংকলনে তা করেছি।

২। তোমাদের জন্য রূপকথা
হুমায়ূন আহমেদ
গল্প লেখার গল্প
যে সব বাবা-মা, তাঁদের বাচ্চাদের জন্যে এই বইটি কিনবেন কিংবা যারা বইটি নাড়াচাড়া করে দেখবেন শেষ পর্যন্ত কিনবেন না এই ভূমিকা তাঁদের জন্য। হঠাৎ রূপকথা লেখার ইচ্ছে কেন হল, প্রথম গল্প কি করে লিখলাম, সেই কথা বলতে ইচ্ছে করছে। একদিন দুপুরে বাসায় ফিরে শুনি আমার বড় মেয়ে নােভা নিখোঁজ। ঘণ্টা দুই ধরে তাকে নাকি কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়ের মা খুব নার্ভাস ধরনের, সে যখন কেঁদে ফেলার চেষ্টা করছে তখন নােভাকে ভাঁড়ার ঘরের চৌকির নিচে আবিষ্কার করা হল। সে গভীর মনােযােগে এমন একটি বই পড়ছে, যা তার পড়ার কথা নয়। মেয়ের মা রাগী গলায় বলল, এই বই তুমি কেন পড়ছ? এটা বড়দের একটা বাজে বই। বলে রাখি যে বই সম্পর্কে বলা হচ্ছে, সেটা আমারই লেখা একটা ভূত-প্রেত বিষয়ক বই।
মায়ের কঠিন শাসনে মেয়ে ফোপাতে-ফোপাতে বলল, ‘বাবা এই সব বাজে বই না লিখলেই পারে। আমাদের জন্যে লিখলেই পারে।’ তখনি ঠিক করলাম বাচ্চাদের জন্যে রূপকথা জাতীয় কিছু গল্প লিখব। লিখতে গিয়ে দেখি কঠিন সমস্যা। রূপকথার গল্প মাথায় আসছেনা। রাজা-রানী দিয়ে ঠিকই শুরু করি, কিন্তু এগুতে পারি না। রাজা, রানী এবং রাজকন্যারা কেমন যেন দূরের মানুষ হয়ে থাকে অথচ আমি চাচ্ছি এমন রাজার গল্প লিখতে, যে আমাদের ঘরের মানুষ। লিখতে না পারার কষ্ট যারা লেখালেখি করেন না তাঁরা কখনাে জানবেন না। আমার কিছু ভালাে লাগে না, সারাক্ষণ রূপকথার গল্প নিয়ে ভাবি। লিখতে বসি, কয়েক লাইন লিখে পাতাটা ছিড়ে কুটি-কুটি করে ফেলি। আবার লিখি। আবার ছিড়ে ফেলি।
এই সময় মেজো মেয়ে জ্বরে পড়ল। আকাশ-পাতাল জ্বর। আমার মন খারাপ হয়ে গেল। শিশুদের কষ্ট আমি কখনাে সহ্য করতে পারি না, আর আমার এমনই ভাগ্য যে, আমার সামনেই শিশুরা সবচে বেশি কষ্ট পায়।
একরাতে মেয়েটার জ্বর একটু কমেছে। আমি তার মাথার কাছে বসে আছি। বিকেলের দিকে ছােটখাটো একটা ঝড় হবার কারণে ঘরে ইলেকট্রিসিটি নেই। মােমবাতি জ্বালানাে হয়েছে। চারদিকে অদ্ভুত আলাে-আঁধার। আমার মেয়ে বলল, একটা গল্প বল।আমি বললাম, কি গল্প ?

১। ইচ্ছা পূরণ
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
ইচ্ছাপুরন একটি শিশুতোষ বই। বইটির প্রধান চরিত্র দশ বছর বয়সী টুটুল। প্রচন্ড চঞ্চল একটি ছেলে, সকল কিছুতেই তার আগ্রহ অগাধ। যেমন সে বাসায় টিকটিকি দেখতে পেয়ে তা ধরতে যায় এবং স্বভাবতই টিকটিকি তার লেজ ফেলে পালিয়ে যায়, এরপর সে তার বাসার সকল টিকটিকির লেজই এক এক করে খুলে ফেলে এরপরে সে ধারনা করে যে লেজওয়ালা সকল প্রানীই হয়ত লেজ খুলে ফেলতে পারে এটা চিন্তা করে সে রাস্তায় থাকা একটি গরুর লেজ ধরে টান দেয় পরে কোনরকমে ঐ গরুর ধাওয়া খেয়ে বাঁচে। এই অসম্ভব চঞ্চল ছেলেটিকে নিয়েই গল্পটি, গল্প টি শিশুদের উপযোগী করে লেখা ও বিভিন্ন স্থানে চিত্র সংযোজন করে দেওয়া হয়েছে যা শিশু কিশোরদের নিকট অত্যান্ত ভালো লাগবে ।
নতুন প্রকাশিত সব গল্পের বই পেতে ক্লিক করুন !