বাংলাদেশের বাংলা প্রকাশনা শিল্পের অন্যতম একটি অংশ জুড়ে রয়েছে ইসলামি বই। বছরের প্রায় ১২ মাসই বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ইসলামী বই প্রকাশিত হয় এবং পাঠকের নানামুখী চাহিদা মিটাতে সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে যায়। দেশব্যাপী বই পৌঁছানোর আদি পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক যুগের আধুনিক ছোয়া।
চলুন তাহলে আর দেরি না করে দেখি বইমেলা-২০২০ এর আলোচিত ৮টি ইসলামি বই।
#প্রোডাক্টিভ মুসলিম
‘প্রোডাক্টিভ মুসলিম’ মূলত একটি আত্মোন্নয়নমূলক বই। এতে উঠে এসেছে—আত্ম-জাগরণ, আত্মনির্মাণ ও আত্মবিকাশের বিভিন্ন দিক। আমাদের মেধা, সময় ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগঠন, ক্যারিয়ার উন্নয়ন এবং সামাজসেবামূলক কর্মোদ্যোগের মধ্য দিয়ে কীভাবে নিজেকে এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা এবং তার একনিষ্ঠ কারিগর হিসেবে গড়ে তুলবো—রয়েছে তার বাস্তবধর্মী কর্মকৌশল।
ইসলামের শাশ্বত শিক্ষা এবং আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের মিশেলে রচিত এ বইটিতে যে প্রোডাক্টিভ লাইফ-স্টাইলের মডেল তুলে ধরা হয়েছে, তা একজন মানুষকে পার্থিব জীবনে সফলতার পাশাপাশি পরকালীন জীবনে উন্নতি সাধনে পথ দেখাবে এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়ে।
বইটি থেকে জানা যাবে:
- কীভাবে বৃদ্ধি করবেন আপনার স্পিরিচুয়াল প্রোডাক্টিভিটি
- কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন আপনার ঘুম, পুষ্টি ও ফিটনেস
- কীভাবে ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে সামাজিক পরিমণ্ডলেও হয়ে উঠবেন দারুণ প্রোডাক্টিভ
- মানসিক বিচ্ছিন্নতা এড়িয়ে কীভাবে ফোকাস ঠিক রাখবেন আপন লক্ষ্যে
- কীভাবে প্রোডাক্টিভ হ্যাবিট গড়ে তুলবেন এবং ইফেক্টিভ রুটিন তৈরি করবেন

বইটি কি কেবল মুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য?
এটা একটা বড় প্রশ্ন যে, বইটি কি কেবলই মুসলিমদের জন্য? না। বইটি মুসলিমদের উদ্দেশ্য করে লেখা হলেও মুসলিম-অমুসলিম সবাই নির্বিশেষে এ থেকে উপকৃত হতে পারবে। মানুষ, মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব, সৃষ্টিকর্তা এবং মহাবিশ্বের আন্তঃসম্পর্ক, মানবজাতির প্রতি আমাদের দায়বোধ এবং পৃথিবীর কাছে ঋণস্বীকার—এসব কমন ভ্যালুজ আমাদের প্রত্যেকের জানা দরকার। যেন বৃহত্তর মানবিক স্বার্থে একটি বসবাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ সবুজ পৃথিবী আমরা গড়ে তুলতে পারি।
এ জাতীয় অন্যান্য বইয়ের তুলনায় এর বিশেষত্ব কী?
সৃষ্টি হিসেবে মানুষ যতটা-না দৈহিক, তার চেয়ে বেশি আত্মিক। আমাদের দেহ নিতান্ত দুর্বল ও পঁচনশীল হলেও আত্মা কিন্তু শাশ্বত। তাই আত্মা ও আধ্যাত্মিকতাকে অস্বীকার করে যে কর্মকৌশল দাঁড় করানো হয়, তাতে তাৎক্ষণিক কিছু ক্ষুদ্র সফলতা অর্জিত হলেও, জীবনের বৃহত্তর সফলতার প্রশ্নে তা চূড়ান্তরূপে ব্যর্থ। এজন্য মানবসত্তার পূর্ণ বিকাশ এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী সফলতার জন্য দরকার এমন এক অত্যুজ্জ্বল কর্মকৌশল, যা একজন মানুষকে পার্থিব জীবনে প্রেডাক্টিভ হওয়ার পাশাপাশি পরকালীন জীবনের ব্যাপারেও প্রোডাক্টিভ হতে সাহায্য করতে পারে। ‘প্রোডাক্টিভ মুসলিম’ এখানেই অনন্য।
#বেলা ফুরাবার আগে
খুব মন খারাপ? হৃদয়ের অন্দরমহলে ভাঙনের জোয়ার? চারপাশের পৃথিবীটাকে বিস্বাদ আর বিরক্তিকর লাগছে? মনে হচ্ছে, আপন মানুষগুলো দূরে সরে যাচ্ছে? হারিয়ে যাচ্ছে প্রিয়জন, প্রিয়মানুষ? কিংবা অযাচিত-অন্যায্য সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত অন্তর? নিন্দুকের নিন্দায় হৃদয়ের গভীরে দুঃখবোধের প্লাবন? এখনই পড়ে ফেলুন তবে ‘বেলা ফুরাবার আগে’।

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বের হবার পর অনেকরই সুপ্ত ইচ্ছা সাজিদ হবার। সাজিদ তৈরির প্রাথমিক খসড়া বললেও এটি মূলত আত্ম-উন্নয়নমূলক বই। দীনের পথে চলতে গিয়ে যে বাধা-বিপত্তি সামনে আসে—সে দিকগুলো নিয়ে মূলত আলোকপাত হয়েছে এখানে। কথা হয়েছে অমিত সম্ভাবনার সে অনন্য দ্বার নিয়েও, যা উন্মুক্ত করলেই মিলবে এক পরম-পবিত্র জীবন।
জীবনের কত বসন্ত চলে গেছে, ম্লান হয়ে গেছে কত ভোর। আবছা স্মৃতির মতো, জীবন আচ্ছন্ন হয়ে আসে ধূসরতায়। সময়ের সরল রেখা অস্ফুট হয় ক্রমে। পাখি সব নীড়ে ফেরে। নদী বয় মোহনায়। তবু কিছু মানুষ ভ্রান্তির মায়াজাল ছিঁড়ে আসতে চায় না ফিরে। মোহ-মায়ার বাঁধন ফুঁড়ে ছুটতে পারে না তারা আদিগন্ত অনন্তের পথে।
ফিরতে হবে তবু। বেলা ফুরাবার আগে। চিনে নিতে হবে পথ ঠিকঠাক। সন্ধ্যা-আঁধার ঘন হবার আগেই, জীবন তরিটিকে ভেড়াতে হবে কূলে। রাতেরও সমাপ্তি আছে। ক্লান্তিরও আছে অবসান। জীবন-জড়তার জোয়ার ছেড়ে নতুন করে ফের উঠতে হবে জ্বলে। নিজেকে পুনঃঝালিয়ে নিতে আজ তবে ডুব দেওয়া যাক ‘বেলা ফুরাবার আগে’।
#ইহুদী জাতির ইতিহাস
বহুকাল ধরেই পবিত্র ভূমি নিয়ে চলে আসছে যুদ্ধ-রক্তপাত। কিন্তু কেন?
অগণিত লাশের বদ্ধভূমি এ জায়গাটিকে ঘিরে ইহুদী-ইসলাম উভয় ধর্মেরই রয়েছে নিজ নিজ দাবি। গত শতাব্দীর মুসলিম-অধ্যুষিত ফিলিস্তিন আজ হয়ে গেছে ইহুদীদের ইসরাইল। কিন্তু এ জায়গাটিই কেন চাই তাদের?

ধর্মবিশ্বাস অনুসারে জেরুজালেম ও এতদাঞ্চলের ওপর তাদের ধর্মীয় দাবিটাই বা কী?
জায়োনিজমের উৎপত্তি হলো কোত্থেকে-কীভাবে?
প্রকৃতপক্ষে এ-অঞ্চলের আদি নিবাসী কারা?
মুসলিম জাতিকে কীভাবে দেখে ইহুদী ধর্ম?
হযরত মুহাম্মাদ সা.-এর আবির্ভাবের পর থেকে আজ পর্যন্ত তাঁকে এবং ইসলামকে নিয়ে ইহুদী ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি কী?
ইহুদী জাতির পতনই বা হলো কী করে?
এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খায় অনেকেরই মনে। কিন্তু এ পুরো বিষয়টি নিয়ে সহজ ও প্রাঞ্জল বাংলায় লিখিত বইয়ের বেশ অভাব। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করতেই পাঠকদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইহুদী ধর্মের প্রাচীন সময়ে। হাজার বছর আগের মধ্যপ্রাচ্য আর মিসরের মরুপ্রান্তরে। ইসলাম, ইহুদী ও খ্রিস্টধর্মের পৃথক পৃথক দৃষ্টিকোণ থেকে একদম গোড়া থেকে তুলে ধরা হয়েছে এ জাতির ইতিহাসকে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ নয় শুধু; ইহুদী কর্তৃক ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি দখলের আড়ালে যে মতবিশ্বাস ঘাপটি মেরে বসে আছে- তা জানতেও সাহায্য করবে ‘ইহুদী জাতির ইতিহাস’।
#স্মার্ট প্যারেন্টিং উইথ মুহাম্মাদ (সা.)
মুসলিম-জীবনের একমাত্র রোল মডেল নবীজি সা.। জীবনের প্রতি ধাপেই তিনি বিশ্ববাসীর কাছে ‘উসওয়াতুন হাসানা’ তথা উত্তম আদর্শ। কতভাবেই না আমরা বুঝেছি তাঁকে। দয়ার সাগর, আমানতদার, ইনসাফবাদী বিচারক, সামরিক বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক নেতা, মহান বিপ্লবী, দায়িত্ববান স্বামী, পরম বন্ধু–নানান পরিচয়ে চিনেছি তাঁকে। এ-গ্রন্থে আমরা নবীজির নতুন এক পরিচয় খুঁজে নেবো। আমরা দেখব–একজন পিতা হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন, চারপাশের শিশু-সাহাবিদের সাথে তিনি কেমন ছিলেন। কীভাবে তিনি শিশু-প্রজন্মকে আগামীর পৃথিবীর জন্য প্রস্তুত করেছিলেন।

আমরা জানবো:
- নবীজি কীভাবে চারপাশের শিশুদের পরিচর্যা করেছিলেন।
- কীভাবে শিশুদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন?
- কীভাবে তিনি শিশুমনে বিশ্বাসের বীজ বুনেছিলেন?
- কীভাবে ইসলামি জিন্দেগীর সাথে শিশুদের অভ্যস্ত করেছিলেন?
- কীভাবে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক করে দিয়েছিলেন?
- কীভাবে উন্নত নৈতিক চরিত্র শিশু-মননে ঢুকে দিয়েছিলেন?
- কীভাবে শিশুদের টিনএজ-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে শিখিয়েছিলেন?
- কীভাবে সমাজের প্রোডাক্টিভ মানুষ হয়ে মানুষের কল্যাণে গড়ে তুলেছিলেন শিশুমন?
- শিশু পরিচর্যার নববি কর্মকৌশল সবিস্তারে জানতে এসময়ের আদর্শ বই ‘স্মার্ট প্যারেন্টিং উইথ মুহাম্মাদ (সা.)’।
#উপমার শৈল্পিকতায় মুগ্ধময় কুরআন
আল-কুরআন একটি জীবন-সংবিধান হবার পাশাপাশি এর সাহিত্য-শৈলীও যে মু’জিযার অন্তর্ভুক্ত সে-কথা আমরা ক‘জনই-বা জানি! আলঙ্করিক কুরআনের সাহিত্যশৈলীর ওপর বাংলাভাষায় তেমন কাজ নেই বললেই চলে। অথচ কুরআনের সাহিত্যমান, চ্যালেঞ্জ ও এর মূল্যায়ন বুঝতে এর উপলব্ধি বেশ জরুরী।

কুরআনে রয়েছে বর্ণনার বিভিন্ন ঢঙ এবং আলঙ্করিক নানা মাত্রার উচ্চমাত্রিক সাহিত্য-অলঙ্কারের সমাবেশ। কুরআন নাযিলের পর মুশরিকরা কেন একে পরাজিত করতে সেসময়ের সর্বোচ্চ শিক্ষিত কবি-সাহিত্যিকদের পাঠাতো? তারাইবা কেন বলতো— ‘এ কুরআন মানুষের পক্ষে রচনা অসম্ভব’? অথচ এ-তো তাদেরই ভাষায় নাযিলকৃত! কারণ তারা কুরআনের অনন্যতা ও অলঙ্কার বুঝতে পেরে যেভাবে নুইয়ে পড়তো, আজ খোদ মুসলিমরাও সে সম্পর্কে অজ্ঞ। অথচ এর সৌন্দর্য-শৈলী, ঢঙ্গ-চ্যালেঞ্জ ও মূল্যায়ন আমাদেরকে কুরআনের অমূল্যতা বুঝতে ও এর প্রতি মুগ্ধতা জাগাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
সাইয়েদ কুতুব শহীদ রহ. সর্বপ্রথম বিস্তৃত পরিসরে এর রচনা শুরু করেন তাঁর তাফসিরের অনন্য ভূমিকাগ্রন্থ ‘আল-কুরআনের শৈল্পিক সৌন্দর্য’ বইতে। কুতুব শহীদ রহ.-এর বইটি এ-কাজের বড় সূচনা বটে। কিন্তু অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে যা আমাদের সামনে আসেনি। এখানে আমরা উপমা, রূপক ও বাগধারার সাহিত্যশৈলী আরো সবিস্তারে জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
#ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ২.০
সমাজ বিনষ্টের মূলে এক অর্থে মুসলিম পুরুষরাই। উপমহাদেশে ইসলাম আসার পর নিম্নবর্ণের হিন্দুরা তার ছায়াতলে এসেছে। বিশাল হিন্দু জনগোষ্ঠীর মাঝে মুষ্টিমেয় মুসলিম ব্যক্তিজীবনে ইসলামকে ধারণ করেছে বটে, কিন্তু পারিবারিক জীবন ও সমাজজীবনে হিন্দুয়ানি স্বভাব ছাড়া যায়নি। বরং বংশপরম্পরায় বয়ে চলেছি সেই মানসিকতা। শিখছে সন্তানরাও।

না হয় মুসলিম বিধবারা কেন বাকি জীবন শাদা শাড়ি পরে? কন্যা সন্তানকে কেন নীচু নজরে দেখা হয়? পণের নাম হয়েছে এখানে যৌতুক আর শ্রাদ্ধের নাম হয়েছে কুলখানি-চল্লিশা। প্রতিমাপূজার জায়গা নিয়েছে মাজার বা পঞ্চপীর। এ যেন এক হিন্দুয়ানি ইসলাম। যার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে প্রধানত মেয়েরা।
নারীকে ইসলাম যে মর্যাদার, প্রশান্তির, আরামের আর সার্থকতার জীবন দিয়েছিল, হিন্দুয়ানি ইসলাম তা নারীদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। পশ্চিমা সমাজ কিন্তু নারীবাদের ঝলমলে সোনার খাঁচা ঠিকই তাদের কাছে পৌছে দিয়েছে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। অথচ আমরা কিনা আমাদের নিজ ঘরের মেয়েদের কাছেই ইসলামের সুমহান মুক্তির ডাক পৌছাতে পারিনি।
ফল হিসেবে চোখ ধাঁধানো শিশিরবিন্দুতে ধোঁকা খেয়ে পশ্চিমা মাকড়সার জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ছটফট করছে আমাদের প্রজাপতিরা৷ সেই পুরুষ জাতির অপরাধবোধ থেকেই জন্ম নিয়েছে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ২.০’।
#শিকড়ের সন্ধানে
অনুবাদ সহ কুরআন পড়তে গেলে অধিকাংশ মানুষই ঘটনাবিবরণীর কোনো তাল মেলাতে পারেন না। ফলে শুরুতেই আটকে যেতে হয়। সূরা বাক্বারার পুরোটা জুড়ে মুসা আ.-এর কাহিনী বলা হচ্ছে। কিন্তু কোথা থেকে শুরু হয়েছে এবং কীসের পরে কী হচ্ছে— কিছুই বুঝে ওঠা যায় না। তাই উৎসাহটাও আর ধরে রাখা যায় না।
মূলত বিষয় হচ্ছে, কুরআনের বর্ণনাপদ্ধতিটা আসলে কথোপকথনের ভঙ্গীর মতো। এটা কোনো ইতিহাসগ্রন্থ নয়। তাই কাহিনীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। অন্য কোনো উৎস থেকে কাহিনীগুলোর ক্রম জেনে না নিলে অনুবাদ পড়তে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা প্রবল।

এ বইয়ে কুরআনে বর্ণিত সে কাহিনীগুলোর একটা অংশ—বনী-ইসরাইলের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে বিবৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে—কীভাবে এক উম্মাহ থেকে ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলিম—এই তিনটা ভাগে ভাগ হয়ে গেল সবাই।
এ বইটা তাই ‘শিকড়ের সন্ধানে’ লিপ্ত হবার একটা বিনম্র প্রচেষ্টা। আমরা কেন মুসলিম? ইহুদি বা খ্রিস্টানদের সাথে আমাদের বিশ্বাস ও আচারের পার্থক্যটা কোথায়—সেটা আবিষ্কারের সূচনা এ বই। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কুরআনের ঘটনাগুলোর একটা নির্মোহ বিশ্লেষণ এটি।
নিজের অজান্তে আমরাও কি ধারণ করে চলেছি সেই একই বৈশিষ্ট্যসমূহ—যার জন্যই আল্লাহ পূর্ববর্তীদের তিরষ্কার করেছেন? আমরা কি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছি—কিয়ামতের দিন যাদের ব্যাপারে অভিযোগ করে রাসূল সা. বলবেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় এ কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে? (সূরা ফুরক্বান, আয়াত : ৩০)। এসব সবিস্তারে জানার যে প্রচেষ্টা— তার নামই ‘শিকড়ের সন্ধানে’।
#মোটিভেশনাল মোমেন্টস-২
নামেই স্পষ্ট, এটি একটি আত্মোন্নয়নমূলক বই। লেখক উদ্ধৃত করেছেন যে, অনেকেই আমাকে ফেসবুকে নানা সময় ইনবক্স করেছেন— ‘মুফতি মেনক, আপনার পোস্ট পড়ার আগ পর্যন্ত চোখে-মুখে কেবল অন্ধকার দেখেছি। আপনার পোস্ট এখন আমার নিত্যদিনের ওষুধে পরিণত হয়েছে।’ কেউ লিখেছে, ‘এতটাই হতাশ ছিলাম যে, নিজের জীবনকে একেবারে শেষ করে দিতে চেয়েছি। এক বন্ধু আমাকে আপনার পেজের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। এখন আমি জীবনকে ভিন্নভাবে দেখি।’ কেউবা আবার মেসেজ দিয়েছে, ‘সবসময় নিজেকে তুচ্ছ ভাবতাম এবং নিজের প্রতি সন্দেহ করতাম। আপনার উদ্ধৃতিগুলো আমার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে সাহায্য করেছে।’

এ বইটি তাদের জন্যই বিশেষভাবে নিবেদিত, জীবনের নানা উত্থান-পতনে যারা হতাশার গভীর সমুদ্রে নিমজ্জিত। সফলতার জন্য আশাবাদী হওয়া ভীষণ জরুরি। বইয়ের উদ্ধৃতিগুলো বারংবার পড়ুন এবং চিন্তা করুন গভীরভাবে। তবে হ্যাঁ, শুধু মুখের কথায় কিন্তু চিড়া ভেজে না, যদি না কাজ করা হয়। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে এ বইয়ের উদ্ধৃতিসমূহ নিশ্চয় আপনার মনোবলকে আরও চাঙ্গা করবে।
2 thoughts on “বইমেলা-২০২০ এর আলোচিত ৮টি ইসলামি বই”
আল হামদুলিল্লাহ বইগুলো খুব সুন্দর ।
ধন্যবাদ।