বর্তমান সময়ের কথাসাহিত্যে আলোচিত নাম হয়ে উঠছেন মাসউদুল হক। বিষয়বৈচিত্র্য, পর্যবেক্ষণ শক্তি ও দৃশ্যপট বর্ণনার অভিনবত্বের জন্য পেয়েছেন বাংলাভাষার অগ্রসর পাঠকদের মনোযোগ। কৈশোরে কবিতায় খুঁজে পেয়েছিলেন জীবনের আনন্দ, সাহিত্যের নানা আঙ্গিককে উপলব্ধি করে ধরা দিয়েছেন কথাসাহিত্যে। মাসউদুল হক লেখালেখির গণ্ডি আপাতত নির্দিষ্ট রেখেছেন উপন্যাস ও ছোটগল্পে।
যে জীবন দেখেননি; যে জীবন চিনেন না সেই জীবন নিয়ে গল্প লেখেন না তিনি। নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে, বাস্তবতাকে পর্যবেক্ষণ করে লিখতে পছন্দ করেন লেখক মাসুদুল হক। মাসউদুল হকের বৃক্ষচারী এই বই মেলা ২০১৯ এ প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ এবং তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘বালকেরা অচেনা থাকে’ আলোড়ন তুলেছিলো পাঠকমহলে। সেই অনুপ্রেরণায় লেখেন উপন্যাস ‘দীর্ঘশ্বাসেরা হাওড়ের জলে ভাসে‘। এরজন্য পেয়েছেন ২০১২ সালে কালি ও কলম পুরস্কার।
ভালো লেখক হবার জন্য শুধু ভালো পাঠক হওয়াকে যথেষ্ট মনে করেন না এই কথাসাহিত্যিক। মনে করেন, কোনো কিছু লেখার আগে একজন লেখকের সময় নিয়ে পূর্ব প্রস্তুতি একান্ত দরকার।
এবছর (২০১৯) বইমেলায় প্রকাশিত নতুনগল্প গ্রন্থ মাসউদুল হকের বৃক্ষচারী । কিন্তু এই বইটি আপনি কেন পড়বেন? এই প্রশ্ন আপনার মনে আসতেই পারে, আসুন লেখক থেকে জেনে নেই, কোন ১০ টি কারনে আপনার এই বইটি পড়া উচিৎ-

১. বৃক্ষচারী গল্প সংকলনের দশটি গল্প লেখার সময়কাল পাঁচ বছর। অর্থাৎ প্রতিটি গল্পের পেছনে গড়ে ছয়মাস সময় ব্যয়িত হয়েছে।
২. দায়িত্ব নিয়ে দাবী করছি, প্রত্যেকটি গল্প , গল্প হিসেবে মৌলিক। পাঠকের মনে হবে না – গল্পটি আগে যেন কোথায় পড়েছি।
৩. কোন সম্পাদকের অনুরোধে বা চাপে বা কোন সংখ্যাকে সামনে রেখে একটি গল্পও লেখা হয়নি।
৪. অন্তত তিনটি গল্প আছে স্যাটায়ারিটিক্যাল। বাংলাসাহিত্যে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা স্যাটায়ারকে পুনরায় নতুন আংগিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
৫. মাইথোলজি, নৃতত্ব , ইতিহাস, ভূগোল এবং মনোবিজ্ঞানের অনেক ধারনা বা প্রবনতাকে নতুন করে আবিষ্কারের বা প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়েছে।
৬. অনেকগুলো গল্প মিলিয়ে একটি গল্প অথবা গল্পের ভেতরে যারা অনেক গল্প শুনতে চান তারা মুগ্ধ হবেন বলে বিশ্বাস।
৭. সব গল্পে একটা নিজস্ব ছন্দ রাখা হয়েছে। পড়তে গিয়ে পাঠক আটকে যাবেন না। প্রায় সব গল্পই শুরু করলে শেষ করতে ইচ্ছে হবে বলে লেখকের বিশ্বাস।
৮. কল্পনাশক্তিই গল্পের মূল ভিত্তি। অভিজ্ঞতা বা পাঠ থেকে লব্ধজ্ঞানকে ব্যবহার করা হয়েছে কল্পনাকে বিশ্বাসযাগ্য করে তুলতে ।
৯. প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের থট প্রসেসকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে – তা অনেক গল্পেই তুলে আনা হয়েছে।
১০. যারা অনেকদিন ‘একইরকম’ গল্প পড়ে পড়ে বাংলাসাহিত্য বিমুখ হয়েছেন তাদের জন্য ‘বৃক্ষচারী’ হতে পারে নতুন অভিজ্ঞতা।
মাসউদুল হকের প্রকাশিত সকল বই