প্রচলিত ধারণা হল, সৃজনশীলতা শুধুমাত্র তাদের জন্যই যাদেরকে নির্দিষ্টভাবে সৃজনশীল কাজ করতে হয় এবং অন্যরা যারা বিশ্লেষণাত্মক বা নিয়মতান্ত্রিক পদে আছেন তাদের তেমন প্রয়োজন নেই। সময়ের সাথে ধারণা ও প্রয়োগ দুটোরই ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে কিছু সফট স্কিল বিষয় রয়েছে যা চাইলে শেখা যায়। শেখার মাধ্যমে সৃজনশীলতাও উন্নয়ন করা যায়। যিনি সৃজনশীল কাজ করবেন তার জন্য যেমন শেখা বা জানার প্রয়োজন আছে। যিনি সরাসরি সৃজনশীল কাজ করবেন না কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্র সৃজনশীলতার ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত দেবেন তারও সৃজনশীলতা সম্পর্কে বোঝার ব্যাপার আছে।
কিন্তু ক্রিয়েটিভিটি আর মার্কেটিং একসূত্রে গাঁথা। একটি ছাড়া আরকেটি চিন্তা করা যায়না। আমাদের দেশে দেখা যায় সৃজনশীলতা চর্চার অভাবে চাইলওে আমরা অনকেে সময় ক্রিয়েটিভ আইডিয়া নিয়ে আসতে পারি না। কখনোবা চেষ্টাও করিনা। অন্যের নানারকম আইডয়িা হাতরে কাছে থাকে সেসব কপি করে কাজ চালিয়ে দেয়ার ঘটনা হামেশাই ঘটছে। আমরা আজ জানব বাজারজাতকরণ বা মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার প্রয়োগ কেন এতটা গুরুত্বর্পূণ ? আর এর মাধ্যমে কীভাবে একজন উদ্যোক্তা বা মার্কেটার অন্যরে কাছ থেকে এগিয়ে থাকতে পারে ?

নান্দনিক উপস্থাপনা:
সুন্দর যা তা সকলের চোখেই সুন্দর। সৃজনশীল রুচির দ্বারা উপস্থাপনা হয়ে উঠে নান্দনিক। হাজারো বিজ্ঞাপন বিলবোর্ডের ভীড়ে কেন লোকে আপনার বিজ্ঞাপন দেখবে যদি তাতে কোনো দৃষ্টিনন্দন কিছু না থাকে। লোকে প্রথমে দৃষ্টি দিতে হবে। তাহলে তারা বার্তাটি দেখতে পাবে। বার্তাটি দেখতে পেলে তারা আপনার ব্রান্ড বা পণ্যের ব্যাপারে ইতিবাচক হবে। তাই বাজারজাতকরণ এর প্রতিটি ধাপে নান্দনিকতার ছোঁয়া দেয়ার সুযোগ রয়েছে। পণ্যের ডিজাইন থেকে শুরু করে লিফলেট, অফিস নকশা থেকে শুরু করে শপিং ব্যাগ পর্যন্ত এর সীমা বিস্তৃত।
সহজে দৃষ্টি আকর্ষণ:
দশজন যেভাবে মার্কেটিং করছে। আপনি যদি সেভাবে না গিয়ে ভিন্ন পথে অগ্রসর হোন নিশ্চয় আপনারটি সহজে চোখে পড়বে। অনেক আয়োজন করে যে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় সেটা আপনি সহজসাধ্য একটি উদ্যোগের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেন।

অল্পখরচে বেশী সম্পৃক্ততা:
যখন অন্যদের মতো একই ধরনের মার্কেটিং করতে হয় তখন নিশ্চয় সেটা পরিমানে বেশী করতে হয়। যেকোনো বিজ্ঞাপন বার বার প্রকাশ করতে হয়। তা না হলে চোখে পড়েনা । ক্রিয়েটিভ একটা এড অন্য এডের মতো বার বার না দেখালেও দর্শকের মনে দাগ কাটতে পারে। ক্রিয়েটিভ মার্কেটিং এর আরেকটা সুবিধা এতে ছোট একটি নতুন আইডিয়া বের করতে পারলে সেটা যদি মার্কেটে খুব চলে তবে অনেক বড় ফল পাওয়া যায়।
ক্রিয়েটিভ ব্রান্ডিং ও ইউনিক আইডেন্টিটি:
ব্রান্ডিং এর জন্য ক্রিয়েটিভ পদ্ধতি খুব ফলদায়ক এতে করে মানুষের মনে কোম্পানী সম্পর্কে আলাদা একটা ধারণা তৈরী হয়। আর দশটা গতানুগতিক কোম্পানির মত আপনার কোম্পানীকে ভাববে না কেউ। এতে করে একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি ও অনন্য পরিচিতি (ইউনিক আইডেন্টিটি) তৈরী হবে। যা আপনার ব্যবসার সুনাম ও ব্যবসার প্রসারে সহায়ক হবে।

ভিন্নতা তৈরী
গতানুগতিক পন্থায় বিপনন না করে সৃজনশীল পদ্ধতিতেত বিপনন করলে মানুষের ভিন্ন রকম একটা ধারণা হয়। আর ১০টা শপ থেকে আপনার শপকে আলাদা মনে করতেই পারে। সবসময় ব্যতিক্রম মানে সুন্দর। আর ব্যতিক্রম মানে আলাদা একটা আবেদন তৈরী করবে। ভোক্তার কাছে আপনার পন্য বা কোম্পানীর প্রতি আস্থা বা দূর্বলতা তৈরী করার প্রথম পদক্ষেপ হলো একটি সুন্দর বিজ্ঞাপন। যে এড শত শত বার বা অনেক বড় করে দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। সে একই মেসেজটি একটি ব্যতিক্রম বা ক্রিয়েটিভ উপায়ে উপস্থাপনার মাধ্যমে বেশী দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।
আকাংখিত ফলাফল:
সৃজনশীলতার একটি অন্যতম গুণ হল তা যেকোন কাজকে সহজবোধ্য করে তোলে। যে কাজ অনেক চেষ্টা, অনেক সাধনার ফলেও সমাধান করা যায় না সে কাজের সহজ সরল সমাধান এনে দেয় সৃজনশীলতা। সৃজনশীলতার সাথে সঠিক কর্মপন্থা ও সুচারু মানসিকতার থাকলে যেকোন কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি ও কাংখিত সাফল্য আসে। কখনো কখনো তা প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যায়। এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।
ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং ও সেলিং বিষয়ক বইসমুহ দেখতে ক্লিক করুন !