২০০৬ সালের কথা। বুয়েট থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকে স্নাতক করার পর প্রথাগত চাকুরিতে না গিয়ে তরুন উদ্যোক্তা মাহমুদুল হাসান সোহাগ কাজ করছেন শিক্ষা এবং গবেষণা নিয়ে। তার সাথে আছেন বুয়েটেরই দুই সহপাঠী মিকাইল এবং মাসুম। বুয়েটের রুমেই তারা গড়ে তুলেছিলেন ছোট্ট অফিস “পাই ল্যাবস”। ছোটখাট প্রজেক্ট করতে করতে একসময় হাত দিলেন বড় কাজে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বানিয়ে ফেললেন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সাফল্যের সাথে ব্যবহৃত হলো তা। অনেক ভাঙা গড়া শেষে আরেক সহপাঠী আবুল হাসান লিটনের সাথে থিতু হলেন তিনি। বাড়তে থাকলো কর্ম পরিসর, একে এক গড়ে তুললেন আরো বেশ কিছু কোম্পানি। ২০১৪ সালের দিকে তারা অনুভব করলেন, শিশুদের জন্যে কিছু একটা করা দরকার! এমন একটা কিছু, যা তাদের শিখতে আগ্রহ যোগাবে, যা তাদের পড়াশোনাকে আনন্দময় করবে, যা তাদের বিজ্ঞান শেখার অবলম্বন হবে। আর এই ভাবনা থেকেই পথ চলা শুরু করে বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের জন্যে প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট বিজ্ঞানবাক্স ।
বিজ্ঞানবাক্সের আইডিয়াটা বাইরের দেশ থেকেই নেয়া, অস্বীকার করার কিছু নেই। ইউরোপ আমেরিকায় বাচ্চাদের জন্যে এমন অনেক রকম সায়েন্স কিট আছে, যেখানে নানারকম সায়েন্স এক্সপেরিমেন্টের উপকরণ দেয়া থাকে, সাথে থাকে ম্যানুয়াল বই, যাতে মজার মজার কার্টুনের মাধ্যমে খেলায় খেলায় বিজ্ঞান শেখানো যায় বাচ্চাদের। বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে যারা ভালো করতে পারবে, তারাই উঠতে পারবে উন্নতির শিখরে। বিজ্ঞানের সূত্রগুলি যে আসলে মুখস্থ করার বিষয় নয়, এগুলি জানতে পারা যে আনন্দের ব্যাপার, সায়েন্স কিটগুলি সেই বোধটাই তৈরি করে।
তড়িতের বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে একটি সায়েন্স কিট তৈরি করার কাজ শুরু হলো। তবে প্রথমে আলোর মুখ দেখলো “আলোর ঝলক” বিজ্ঞানবাক্সটি (তখন তা জ্ঞানবাক্স নামে পরিচিত ছিলো)।
সেই শুরু আমাদের পথচলা। আপনাদের ভালোবাসায় এখনও এই চলা অব্যাহত রয়েছে। আপনাদের হাতে আমরা তুলে দিয়েছি আলো, তড়িৎ, শব্দ, রসায়নের ৬টি কিট। বাচ্চারা আনন্দের সাথে শিখছে, বিজ্ঞান তাদের কাছে কঠিন কিছু মনে হচ্ছে না, এর চেয়ে আনন্দের আর কিছুই হতে পারে না! আপনার সন্তান কি বিজ্ঞান ভয় পায়? পড়াশোনা তার কাছে নিরানন্দের ব্যাপার? বিজ্ঞানবাক্স পরিবার তাকে সাহায্য করার জন্যে প্রস্তুত!
এবার জেনে নিন কোন বিজ্ঞানবাক্সটি কাদের জন্যে-?

আলোর ঝলক-
আলোর ঝলকে আছে ২৫টি এক্সপেরিমেন্ট। এর মধ্যে সবচেয়ে মজার হলো ক্যালাইডোস্কোপ, পেরিস্কোপ, স্ট্রোবোস্কোপ, নিউটনের বর্ণ চাকতি, এবং মজার চশমা।
আলোর ঝলক সবচেয়ে বেশি ভালো হবে ক্লাশ ওয়ান থেকে ক্লাশ ফোরের জন্যে। আর বাচ্চারা তো খুউউব পছন্দ করবে!

তড়িৎ তাণ্ডব–
তড়িৎ তাণ্ডবে আছে ২০টি এক্সপেরিমেন্ট। যারা ইলেকট্রিকাল সার্কিটের কাজ শিখতে চাও, তাদের জন্যে এটি খুবই ভালো হবে। এখানে আছে মোটর, ডায়োড, এল ডি আর, সিরিজ-প্যারালাল সার্কিট, ইত্যাদি শেখার সুযোগ।
ক্লাশ ফোর থেকে সিক্সের জন্যে খুব ভালো হবে এটি।

চুম্বকের চমক–
চুম্বকের চমকে আছে সবচেয়ে বেশি, ২৬টি এক্সপেরিমেন্ট। চুম্বকের একদম বেসিক পাঠ থেকে শুরু করে এখানে আছে ইলেক্ট্রোম্যাগনেট, চুম্বক ডোমেইন এর মত বিষয়গুলোও। আবার এটাতে আছে ফিশিং গেম, সত্য মিথ্যার মত মজার খেলাও। তাই এটি ক্লাশ সিক্স থেকে এইটের ছাত্রদের পড়ালেখায় সাহায্য করার পাশাপাশি বাচ্চাদেরও ভালো লাগবে।

রসায়ন রহস্য-
রসায়ন রহস্যের এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। কারণ কেমিক্যালগুলোর বিক্রিয়া শুরু হতে একটু সময় লাগে। কারণ কেমিক্যালগুলোর বিক্রিয়া শুরু হতে একটু সময় লাগে। তবে সময় নিয়ে করলে লাভা ল্যাম্প, আতশবাজীর পরীক্ষা, ফুঁ না দিয়েই বেলুন ফোলানো, এগুলো সবারই ভালো লাগবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের। এতে আছে ২০টি এক্সপেরিমেন্ট।

অদ্ভুত মাপজোখ-
তড়িৎ তান্ডব এবং চুম্বকের চমক যাদের ভালো লেগেছে, অদ্ভুত মাপজোখ তাদের ভালো লাগবেই। এখানে একটি মজার মিটার দিয়ে নানারকম মেজারমেন্ট করা যায়। যেমন, শব্দ, বিদ্যুৎ, আই আর রশ্মি, ইত্যাদি।
অদ্ভুত মাপজোখ ক্লাশ সিক্স থেকে ক্লাশ এইটের ছাত্রদের ভালো লাগবে। সবগুলো বিজ্ঞানবাক্সের সাথে রয়েছে ম্যানুয়াল বই। এছাড়া রয়েছে ভিডিও টিউটোরিয়াল।

শব্দকল্প-
শব্দকল্পের এক্সপেরিমেন্টগুলো একটু উঁচু ক্লাসের জন্যে। যারা ক্লাস নাইনে উঠলো, তাদের জন্যে এই কিটের এক্সপেরিমেনগটগুলি খুবই উপযোগী হবে। শুধু তাই না, উচ্চ মাধ্যমিকের পড়ার সাথেও শব্দকল্পের এক্সপেরিমেন্টগুলি সঙ্গতিপূর্ণ।

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞানবাক্স-
নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটি পঞ্চম শ্রেণির জন্যে বিশেষ বিজ্ঞানবাক্স। পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের সমস্ত এক্সপেরিমেন্ট হাতে কলমে করে দেখার সুযোগ আছে এখানে!
সুন্দর হোক আপনার সন্তানের ভবিষ্যত। গড়ে উঠুক অন্যরকম প্রজন্ম।
বিজ্ঞানবাক্সের সকল সায়েন্স কিট পেতে