‘অ’ লিখে আমরা হাতেখড়ি শুরু করেছি দীর্ঘ প্রজন্ম ধরে। তারপর শিখেছি অ-তে অজগর, অজগর ওই আসছে তেড়ে! কিন্তু এমনটি তো হতেই পারত, অ নয়, বরং শুরুটা হল অজগর দিয়ে। ছন্দে ছন্দে বলতাম অজগর ওই আসছে তেড়ে, আমটি আমি খাব পেড়ে কিংবা অন্য কিছু। অজগর -এ ‘অ’ আছে জেনেই না হয় শিখতাম, কেমন করে লিখতে হয় ‘অ’ বর্ণটি। শিশু শিক্ষা এখন আর পড়ে নেই মান্ধাতার সময়ে। ভালোবেসে, আনন্দ দিয়ে শিশুদের পড়ানোই আজকালকার পৃথিবীর বদলে যাওয়া নিয়ম, আর তাতে শিশুদের জন্যেও পড়াশোনা হয়ে ওঠে আনন্দের এক রঙীন ফুল! কিন্তু শিশুদের অভিনব উপায়ে পড়াশোনা করানোর জন্য বা শিক্ষা দেয়ার জন্য প্রয়োজন আছে বিশেষ কিছু খেলনা বা উপকরণেরও। দেখে নিই এরকম উপকরণ কী কী আছে-
- সহজ ক্রাফটিং, লেগো সেট, রং পেন্সিল অথবা সুন্দর রঙীন ডায়েরি – উপহার হিসেবে এমন খেলনা বেছে নিতে পারি, যা থেকে তারা হবে সৃজনশীল আর কল্পনাবিলাসী। শিশু শিখতে ভালোবাসে খেলার ছলে। আমরা তো পারি তাদের খেলাটাকেই প্রাধান্য দিতে।

- রুবিক্স কিউব, রঙীন মার্বেল, সুডোকু, কালার ম্যাচিং গেইম কিংবা কি-লক ম্যাচিং– এক্ষেত্রে তার খেলার ধরণটাই বদলে দিতে পারি। প্রত্যুতপন্নমতি হওয়া কিন্তু শব্দটির মতোই জটিল। তাই শিশুর বুদ্ধির সূক্ষ্ণতা এবং যুক্তির প্রতি আলাদা গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

- বিভিন্ন কাউন্টিং গেইম, পাজল ও বিজ্ঞানবাক্স– গণিত ও বিজ্ঞান নিয়ে শিশুকে শেখানোর আগে আনন্দময় করে তোলাটা বেশি জরুরি। সে যখন বিজ্ঞানবাক্সের ছোট ছোট এক্সপেরিমেন্ট করবে, দেখবে তার পরিচিত উপাদানগুলো দিয়েই মজার কিছু ঘটছে। সব এক্সপেরিমেন্ট শেষ হলেও আগ্রহটা থেকেই যাবে। নিজের ইচ্ছেতেই তখন পাঠ্যবইয়ে খুঁজবে নতুন এক্সপেরিমেন্ট।

- হাতে তৈরি খেলনা– এ কাজটি শিশুকে নিয়ে একসাথে করতে পারেন। এতে সে বুঝবে তাকে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নিজের অজান্তে খেলার আনন্দে শেখাটাই মূল কথা, যেখানে শিশু জানবে না সে শিখছে, নাকি তাকে শেখানো হচ্ছে।

- পছন্দ ও প্রয়োজনীয় উপহার–শিশুর হয়তো লাল রঙ ও চকোলেট পছন্দ। তাকে লাল গিফট প্যাকেটে মুড়ে একটি বিজ্ঞানবাক্স ও পছন্দের চকোলেট উপহার দেয়া যেতে পারে। কিংবা পছন্দের কার্টুন থিম-এর ওপর কোন শিক্ষা বিষয়ক খেলনা।

আবার ফিরে যাই সেই অজগরে। শিশু সহজাতভাবে যা শেখে তাই শেখা। বাকিটা জোরপূর্বক গলাধঃকরণ। তাই তার খেলনা, খেলার পরিবেশ, সবকিছুতেই ছড়িয়ে দিতে হবে শেখার উপকরণ। ‘অ’ নয়, অজগরটাই যেন আগে আসে!